মানুষের মধ্যে এমন লোকও আছে যারা আল্লাহ ছাড়া অপর কোন শক্তিকে আল্লাহর অংশীদার বা সমতুল্য হিসেবে গ্রহণ করে এবং তাকে এমনভাবে ভালবাসে যেমনিভাবে একমাত্র আল্লাহকেই ভালবাসা উচিৎ।’’وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَتَّخِذُ مِنْ دُونِ اللَّهِ أَنْدَادًا يُحِبُّونَهُمْ كَحُبِّ اللَّهِ (البقرة: (বাকারা : ১৬৫)
আল্লাহ ইয়াহূদী ও খৃস্টানদের কাফির বলেছেন
﴿وَقَالَتِ ٱلۡيَهُودُ عُزَيۡرٌ ٱبۡنُ ٱللَّهِ وَقَالَتِ ٱلنَّصَٰرَى ٱلۡمَسِيحُ ٱبۡنُ ٱللَّهِۖ ذَٰلِكَ قَوۡلُهُم بِأَفۡوَٰهِهِمۡۖ يُضَٰهُِٔونَ قَوۡلَ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ مِن قَبۡلُۚ قَٰتَلَهُمُ ٱللَّهُۖ أَنَّىٰ يُؤۡفَكُونَ ٣٠ ٱتَّخَذُوٓاْ أَحۡبَارَهُمۡ وَرُهۡبَٰنَهُمۡ أَرۡبَابٗا مِّن دُونِ ٱللَّهِ وَٱلۡمَسِيحَ ٱبۡنَ مَرۡيَمَ وَمَآ أُمِرُوٓاْ إِلَّا لِيَعۡبُدُوٓاْ إِلَٰهٗا وَٰحِدٗاۖ لَّآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَۚ سُبۡحَٰنَهُۥ عَمَّا يُشۡرِكُونَ ٣١﴾ [التوبة: ٣٠، ٣١]
“আর ইয়াহূদীরা বলে, উযাইর আল্লাহর পুত্র এবং নাসারারা বলে, মাসীহ আল্লাহর পুত্র। এটা তাদের মুখের কথা, ইতঃপূর্বে যারা কুফুরী করেছে তারা সেসব লোকের মতোই কথা বলছে। আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করুন, কোথায় ফেরানো হচ্ছে এদেরকে? তারা আল্লাহকে ছেড়ে তাদের পণ্ডিত ও সংসার-বিরাগীদের এবং মারইয়ামপুত্র মাসীহকে রব হিসেবে গ্রহণ করেছে। অথচ তারা এক ইলাহের ইবাদত করার জন্য আদিষ্ট হয়েছে, তিনি ছাড়া কোনো (সত্য) ইলাহ নেই। তারা যে শরীক করে তা তিনি থেকে পবিত্র”। [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ৩০-৩১]
সাহাবী আবু সাঈদ রা. থেকে বর্ণিত আছে রাসূল এরশাদ করেছেন,
لتتبعن سنن من كان قبلكم حذوة القذة بالقذة حتى لو دخلوا جحر ضب لدخلتموه قالو يا رسول الله اليهود والنصارى؟ قال فمن؟ (أخرجاه)
‘‘আমি আশংকা করছি ‘‘তোমরা অবশ্যই তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের রীতি-নীতি অক্ষরে অক্ষরে অনুসরণ করবে [যা আদৌ করা উচিৎ নয়] এমনকি তারা যদি গুঁই সাপের গর্তেও ঢুকে যায়, তোমরাও তাতে ঢুকবে। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, ‘ইয়া রাসূলুল্লাহ, তারা কি ইহুদী ও খৃষ্টান?’ জবাবে তিনি বললেন, তারা ছাড়া আর কে? (বুখারি ও মুসলিম)
ইয়াহূদী-খৃস্টানরা মুশরিক
﴿لَقَدۡ كَفَرَ ٱلَّذِينَ قَالُوٓاْ إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلۡمَسِيحُ ٱبۡنُ مَرۡيَمَۖ﴾ [المائدة: ٧٢]
“অবশ্যই তারা কুফুরী করেছে, যারা বলে, নিশ্চয় মারইয়াম পুত্র মাসীহ-ই আল্লাহ”। [সূরা আল-মায়েদা, আয়াত: ৭২]
﴿لَّقَدۡ كَفَرَ ٱلَّذِينَ قَالُوٓاْ إِنَّ ٱللَّهَ ثَالِثُ ثَلَٰثَةٖۘ﴾ [المائدة: ٧٣]
“অবশ্যই তারা কুফুরী করেছে, যারা বলে, নিশ্চয় আল্লাহ তিন জনের তৃতীয়জন”। [সূরা আল-মায়েদা, আয়াত: ৭৩]
﴿لُعِنَ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ مِنۢ بَنِيٓ إِسۡرَٰٓءِيلَ عَلَىٰ لِسَانِ دَاوُۥدَ وَعِيسَى ٱبۡنِ مَرۡيَمَۚ﴾ [المائدة: ٧٨]
“বনু ইসরাইলের মধ্যে যারা কুফুরী করেছে তাদেরকে দাউদ ও মারইয়াম পুত্র ঈসার মুখে লা‘নত করা হয়েছে”। [সূরা আল-মায়েদা, আয়াত: ৭৮]
﴿إِنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ مِنۡ أَهۡلِ ٱلۡكِتَٰبِ وَٱلۡمُشۡرِكِينَ فِي نَارِ جَهَنَّمَ خَٰلِدِينَ فِيهَآۚ﴾ [البينة: ٦]
“নিশ্চয় কিতাবিদের মধ্যে যারা কুফুরী করেছে ও মুশরিকরা, জাহান্নামের আগুনে চিরদিন থাকবে”। [সূরা আল-বাইয়্যেনাহ, আযাত: ৬]
﴿وَدُّواْ لَوۡ تُدۡهِنُ فَيُدۡهِنُونَ ٩﴾ [القلم: ٩]
“তারা চায়, যদি তুমি আপোষকামী হও, তবে তারাও আপোষকারী হবে”। [সূরা আল-কালাম, আয়াত: ৯]
নবী বলেছেন:
«والذي نفسي بيده، لا يسمع بي يهودي ولا نصراني من هذه الأمة- أي أمة الدعوة- ثم لا يتبع ما جئت به، أو قال لا يؤمن بما جئت به إلا كان من أصحاب النار».
“সে সত্ত্বার কসম, যার হাতে আমার নফস, এই উম্মত থেকে যে কেউ আমার সম্পর্কে শুনল ইয়াহূদী হোক বা নাসারা হোক, অতঃপর আমার আনিত দীনের অনুসরণ করল না, অথবা বলেছেন, আমার আনিত দীনের প্রতি ঈমান আনল না, সে অবশ্যই জাহান্নামী”। (সহীহ মুসলিম)
﴿ٱلَّذِينَ يَتَّبِعُونَ ٱلرَّسُولَ ٱلنَّبِيَّ ٱلۡأُمِّيَّ ٱلَّذِي يَجِدُونَهُۥ مَكۡتُوبًا عِندَهُمۡ فِي ٱلتَّوۡرَىٰةِ وَٱلۡإِنجِيلِ يَأۡمُرُهُم بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَيَنۡهَىٰهُمۡ عَنِ ٱلۡمُنكَرِ وَيُحِلُّ لَهُمُ ٱلطَّيِّبَٰتِ وَيُحَرِّمُ عَلَيۡهِمُ ٱلۡخَبَٰٓئِثَ وَيَضَعُ عَنۡهُمۡ إِصۡرَهُمۡ وَٱلۡأَغۡلَٰلَ ٱلَّتِي كَانَتۡ عَلَيۡهِمۡۚ فَٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ بِهِۦ وَعَزَّرُوهُ وَنَصَرُوهُ وَٱتَّبَعُواْ ٱلنُّورَ ٱلَّذِيٓ أُنزِلَ مَعَهُۥٓ أُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡمُفۡلِحُونَ ١٥٧﴾ [الاعراف: ١٥٧]
“যারা অনুসরণ করে রাসূলের, যিনি উম্মী নবী, যার গুণাবলি তারা নিজেদের কাছে তাওরাত ও ইঞ্জিলে লিখিত পায়, যে তাদেরকে সৎ কাজের আদেশ দেয় ও বারণ করে অসৎ কাজ থেকে এবং তাদের জন্য পবিত্র বস্তু হালাল করে আর অপবিত্র বস্তু হারাম করে। আর তাদের থেকে বোঝা ও শৃঙ্খল-যা তাদের উপরে ছিল, অপসারণ করে। সুতরাং যারা তার প্রতি ঈমান আনে, তাকে সম্মান করে, তাকে সাহায্য করে এবং তার সাথে যে নূর নাযিল করা হয়েছে তা অনুসরণ করে, তারাই সফলকাম”। [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ১৫৭]
ঈসা ইবন মারইয়াম বলেছেন, তার পক্ষ থেকে আল্লাহ যা ব্যক্ত করেছেন:
﴿ َٰبَنِيٓ إِسۡرَٰٓءِيلَ إِنِّي رَسُولُ ٱللَّهِ إِلَيۡكُم مُّصَدِّقٗا لِّمَا بَيۡنَ يَدَيَّ مِنَ ٱلتَّوۡرَىٰةِ وَمُبَشِّرَۢا بِرَسُولٖ يَأۡتِي مِنۢ بَعۡدِي ٱسۡمُهُۥٓ أَحۡمَدُۖ فَلَمَّا جَآءَهُم بِٱلۡبَيِّنَٰتِ قَالُواْ هَٰذَا سِحۡرٞ مُّبِينٞ﴾ [الصف: ٦]
“হে বনু ইসরাইল, নিশ্চয় আমি তোমাদের নিকট আল্লাহর রাসূল, আমার পূর্ববর্তী তাওরাতের সত্যায়নকারী এবং একজন রাসূলের সুসংবাদদাতা যিনি আমার পরে আসবেন, যার নাম আহমদ। অতঃপর সে যখন সুস্পষ্ট নিদর্শনসমূহ নিয়ে আগমন করল, তখন তারা বলল, ‘এটা-তো স্পষ্ট জাদু’।” [সূরা আস-সাফ, আয়াত: ৬]
আল্লাহ বলছেন: অতঃপর সে যখন তাদের নিকট অর্থাৎ বনু ইসরাইলের নিকট আসল, কে আসল…? কে এসেছেন তাদের নিকট? যাকে আহমদ বলে সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে, তিনিই তো এসেছেন? যখন তাদের নিকট তিনি আসলেন, তাদের উচিৎ ছিল তাকে গ্রহণ করা, কিন্তু না, উল্টো তাকে প্রত্যাখ্যান করে বলল: “তিনি তো স্পষ্ট জাদুকর”। [সূরা আস-সাফ, আয়াত: ৬]
কাফির – কুফুরী
﴿وَمَن يَبۡتَغِ غَيۡرَ ٱلۡإِسۡلَٰمِ دِينٗا فَلَن يُقۡبَلَ مِنۡهُ وَهُوَ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ مِنَ ٱلۡخَٰسِرِينَ ٨٥﴾ [ال عمران: ٨٥]
“আর যে ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো দীন চায়, তার কাছ থেকে তা কখনো গ্রহণ করা হবে না”। [সূরা আল-মায়েদা, আয়াত: ৮৫]
﴿ٱلۡيَوۡمَ أَكۡمَلۡتُ لَكُمۡ دِينَكُمۡ وَأَتۡمَمۡتُ عَلَيۡكُمۡ نِعۡمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ ٱلۡإِسۡلَٰمَ دِينٗاۚ﴾ [المائدة: ٣]
“আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পূর্ণ করে দিলাম এবং তোমাদের ওপর আমার নি‘আমত সম্পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের জন্য ইসলামকে দীন হিসেবে পছন্দ করলাম”। [সূরা আল-মায়েদা, আয়াত: ৩]
আল্লাহ বলেন:
﴿وَرَحۡمَتِي وَسِعَتۡ كُلَّ شَيۡءٖۚ فَسَأَكۡتُبُهَا لِلَّذِينَ يَتَّقُونَ وَيُؤۡتُونَ ٱلزَّكَوٰةَ وَٱلَّذِينَ هُم بَِٔايَٰتِنَا يُؤۡمِنُونَ ١٥٦ ٱلَّذِينَ يَتَّبِعُونَ ٱلرَّسُولَ ٱلنَّبِيَّ ٱلۡأُمِّيَّ ٱلَّذِي يَجِدُونَهُۥ مَكۡتُوبًا عِندَهُمۡ فِي ٱلتَّوۡرَىٰةِ وَٱلۡإِنجِيلِ يَأۡمُرُهُم بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَيَنۡهَىٰهُمۡ عَنِ ٱلۡمُنكَرِ وَيُحِلُّ لَهُمُ ٱلطَّيِّبَٰتِ وَيُحَرِّمُ عَلَيۡهِمُ ٱلۡخَبَٰٓئِثَ وَيَضَعُ عَنۡهُمۡ إِصۡرَهُمۡ وَٱلۡأَغۡلَٰلَ ٱلَّتِي كَانَتۡ عَلَيۡهِمۡۚ فَٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ بِهِۦ وَعَزَّرُوهُ وَنَصَرُوهُ وَٱتَّبَعُواْ ٱلنُّورَ ٱلَّذِيٓ أُنزِلَ مَعَهُۥٓ أُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡمُفۡلِحُونَ ١٥٧ قُلۡ يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ إِنِّي رَسُولُ ٱللَّهِ إِلَيۡكُمۡ جَمِيعًا ٱلَّذِي لَهُۥ مُلۡكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۖ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ يُحۡيِۦ وَيُمِيتُۖ فََٔامِنُواْ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِ ٱلنَّبِيِّ ٱلۡأُمِّيِّ ٱلَّذِي يُؤۡمِنُ بِٱللَّهِ وَكَلِمَٰتِهِۦ وَٱتَّبِعُوهُ لَعَلَّكُمۡ تَهۡتَدُونَ ١٥٨﴾ [الاعراف: ١٥٦، ١٥٨]
“আর আমার রহমত সব বস্তুকে পরিব্যাপ্ত করেছে। সুতরাং আমি তা লিখে দেব তাদের জন্য যারা তাকওয়া অবলম্বন করে এবং যাকাত প্রদান করে। আর যারা আমার আয়াতসমূহের প্রতি ঈমান আনে। যারা অনুসরণ করে রাসূলের, যিনি উম্মী নবী, যার গুণাবলি তারা নিজেদের কাছে তাওরাত ও ইঞ্জিলে লিখিত পায়, যে তাদেরকে সৎ কাজের আদেশ দেয় ও বারণ করে অসৎ কাজ থেকে এবং তাদের জন্য পবিত্র বস্তু হালাল করে আর অপবিত্র বস্তু হারাম করে। আর তাদের থেকে বোঝা ও শৃঙ্খল-যা তাদের উপরে ছিল, অপসারণ করে। সুতরাং যারা তার প্রতি ঈমান আনে, তাকে সম্মান করে, তাকে সাহায্য করে এবং তার সাথে যে নূর নাযিল করা হয়েছে তা অনুসরণ করে, তারাই সফলকাম। বল, হে মানুষ, আমি তোমাদের সবার প্রতি আল্লাহর রাসূল, যার রয়েছে আসমানসমূহ ও জমিনের রাজত্ব। তিনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই। তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু দেন। সুতরাং তোমরা ঈমান আন আল্লাহর প্রতি ও তার প্রেরিত উম্মী নবীর প্রতি, যে আল্লাহ ও তার বাণীসমূহের প্রতি ঈমান রাখে। আর তোমরা তার অনুসরণ কর, আশা করা যায়, তোমরা হিদায়েত লাভ করবে”। [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ১৫৬-১৫৮]
Tagged: Islamic Fatwa