Mahabharata of Vyasa (Bengali Translation by Kaliprasanna Singha)

Home Forums Social and Cultural Discourse Mahabharata of Vyasa (Bengali Translation by Kaliprasanna Singha)

Viewing 0 reply threads
  • Author
    Posts
    • #130003
      advtanmoy
      Keymaster

      কোন সময়ে নৈমিষারণ্যে কুলপতি শৌনক দ্বাদশবার্ষিক যজ্ঞের অনুষ্ঠান করিয়াছিলেন। একদা মহর্ষিগণ দৈনন্দিন কর্ম্ম সমাধানপূর্ব্বক সকলে সমবেত হইয়া কথাপ্রসঙ্গে সুখে অধ্যাসীন হইয়া আছেন, ইত্যবসরে লোমহর্ষণ-পুৎত্র পৌরাণিক সৌতি অতি বিনীতভাবে তথায় সমুপস্থিত হইলেন। নৈমিষারণ্যবাসী ঋষিগণ তাঁহাকে অভ্যাগত দেখিয়া অত্যাশ্চর্য্য কথা শ্রবণ করিবার নিমিত্ত চতুর্দ্দিকে বেষ্টন করিয়া দণ্ডায়মান রহিলেন। উগ্রশ্রবাঃ সৌতি কৃতাঞ্জলিপুটে তাঁহাদিগকে অভিবাদন করিয়া তপস্যার কুশল জিজ্ঞসা করিলেন। তাঁহারাও অতিথির যথোচিত পূজা করিয়া বসিবার নিমিত্ত আসন প্রদানপূর্ব্বক আপনারাও যথাস্থানে উপবেশন করিলেন। অনন্তর সৌতি নির্দ্দিষ্ট স্থানে উপবিষ্ট হইলে ঋষিরা তাঁহাকে বিশ্রান্ত দেখিয়া কথাপ্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করিলেন. “হে কমললোচন সূতনন্দন! এখন কোথা হইতে আসিতেছ এবং এতকাল কোন্ কোন্ স্থানেই বা পর্য্যটন করিলে, তাহা আনুপূর্ব্বিক সমুদয় বল।” সৌতি এরূপ জিজ্ঞাসিত হইলে অতি শান্তপ্রকৃতি ঋষিদিগের সমক্ষে কহিতে লাগিলেন, “হে মহর্ষিগণ! আমি মহাত্মা জনমেজয়ের সর্পযজ্ঞে গমন করিয়াছিলাম। তথায় বৈশম্পায়নের মুখে কৃষ্ণ-দ্বৈপায়ন [ বেদব্যাস] প্রোক্ত মহাভারতীয় কথা শ্রবণ করিলাম। অনন্তর তথা হইতে প্রস্থান করিয়া বহুবিধ তীর্থ দর্শন ও অনেক আশ্রমে ভ্রমণ করিয়া পরিশেষে সমন্তপঞ্চক [কুরুক্ষেত্র] তীর্থে উপস্থিত হইলাম;– পূর্ব্বে যথায় কুরু ও পাণ্ডব এবং উভয়পক্ষীয় ভূপালদিগের তুমুল সংগ্রাম হইয়াছিল। তথা হইতে আপনাদিগের দর্শানার্থে এই পবিত্র আশ্রমে আসিয়াছি। তথা হইতে আপনাদিগের দর্শনার্থে এই পবিত্র আশ্রমে আসিয়াছি। যেহেতু, আপনারা আমার পক্ষে সাক্ষাৎ ব্রহ্মস্বরূপ। হে তেজস্বী ঋষিগণ! আপনারা যজ্ঞে আহুতি প্রদান করিয়া অতি পূতমনে আসনে উপবেশন করিয়া আছেন; অনুমতি করুন, ধর্ম্মসম্বন্ধীয় পৌরাণিকী কথা কি ভূপতিদিগের ইতিবৃত্ত বা ঋষিদিগের ইতিহাস, ইহার মধ্যে কি বর্ণন করিব?” ঋষিগণ কহিলেন, “ভগবান্ বেদব্যাস যে ইতিহাস কহিয়াছেন, সুরগণ ও ব্রহ্মর্ষিগণ যাহা শ্রবণ করিয়া অশেষ প্রশংসা করেন এবং বৈশম্পায়ন সর্পযজ্ঞে জনমেজয়ের নিকট যাহা কীর্ত্তন করিয়াছেন, আমরা সেই ইতিহাস শ্রবণ করিতে সাতিশয় অভিলাষ করি। কারণ, যাহা সকল উপাখ্যান হইতে শ্রেষ্ঠ ও নানাশাস্ত্রের সার-সঙ্কলন করিয়া রচিত ও বেদচতুষ্টয়ের অনুগত হইয়াছে এবং যাহাতে আত্মতত্ত্ববিষয়ক সম্যক্ মীমাংশা আছে, তাহা শ্রদ্ধা ও ভক্তিসহকারে শ্রবণ করিলে পাপভয়ের নিবারণ হয়।” ঋষিগণের প্রার্থনা-বাক্যে সন্তুষ্ট হইয়া উগ্রশ্রবাঃ কহিলেন, যিনি এই অখণ্ড প্রকাণ্ড ব্রহ্মাণ্ডের আদিপুরুষ ও অদ্বিতীয় অধীশ্বর, যিনি স্থাবর-জঙ্গম সকলের স্রষ্টা ও পাতা [রক্ষক], শাস্ত্রে যাঁহাকে একমাত্র পরব্রহ্ম বলিয়া নির্দ্দেশ করে, যাঁহার প্রীতির নিমিত্ত কেহ প্রজ্জ্বলিত হুতাশনে মন্ত্রোচ্চারণপুর্ব্বক বারংবার আহুতি প্রদান করিতেছেন, যাঁহার সাক্ষাৎকারলাভপ্রত্যাশায় কেহ বা শত শত বৎসর নির্জ্জনে একান্তমনে ধ্যান, মনন ও অতি কঠোর ব্রতাদির অনুষ্ঠান করিতেছেন, কেহ বা মায়াপ্রপঞ্চস্বরূপ সংসারে বিরক্তিভাব প্রকাশ করিয়া যাঁহার উপাসনার নিমিত্ত আত্মীয়-স্বজন সকলকেই বিসর্জ্জন করিয়া অরণ্যে অরণ্যে ভ্রমণ করিতেছেন, এইরূপ যাঁহাকে লাভ করিবার নিমিত্ত এই পৃথিবীস্থ সমস্ত লোকেই অতি দুষ্কর কর্ম্মে হস্তক্ষেপণ করিতেছে, –সেই অনাদি, অনন্ত, অভিলষিত-ফলদাতা, বিশ্বপাতা [বিশ্বপালক], চরাচরগুরু হরির চরণে প্রণিপাত করিয়া বেদব্যাস- প্রণীত অতি পবিত্র বিচিত্র ইতিহাস বর্ণন করিব। এই বিশাল মহীতলে কতশত মহাত্মারা ঐ ইতিহাস কহিয়া গিয়াছেন, অনেকেই কহিতেছেন এবং ভবিষ্যৎকালেই কহিবেন। ব্রাহ্মণেরা বহুকষ্টে ও অভিনিবিষ্টচিত্তে সংক্ষেপে বা সবিস্তারে যে বেদ অধ্যায়ন করিয়া থাকেন, যাহা জ্ঞানের একমাত্র সীমা, সেই বেদশাস্ত্রের অনুগত করিয়া এই ইতিহাস মহাত্মা বেদব্যাস কর্ত্তৃক বিরচিত হইয়াছে। ইহাতে শাস্ত্রের মত ও লৌকিক আচার-ব্যবহারের রীতিনীতি স্পষ্টরূপে নির্দ্দিষ্ট আছে। ইহা নানা সুচারু শব্দ ও রমণীয়ভাবে পরিপূর্ণ এবং নানাপ্রকার ছন্দোবন্ধে নিবদ্ধ ও অলঙ্কৃত হইয়াছে। এই নিমিত্ত পণ্ডিতমণ্ডলী মহাভারতের সবিশেষ সমাদর করিয়া থাকেন।

      [See the full post at: Mahabharata of Vyasa (Bengali Translation by Kaliprasanna Singha)]

Viewing 0 reply threads
  • You must be logged in to reply to this topic.

Recent Updates