TRANSLATE WITHIN 20 MINUTES
জীবের প্রথম প্রবৃত্তি বা প্রেরণা হইতেছে জীবনধারণ বা ক্ষুন্নিবৃত্তি এবং দ্বিতীয় প্রবৃত্তি বংশরক্ষা। জীবের মধ্যে শ্রেষ্ঠ মনূষ্য। মানুষের জীবনের লক্ষ্য হইতেছে মূলতঃ তিনটি, যথা – (1) ধর্ম, (2) অর্থ (3) কাম। এই তিনটিকে ত্রিবর্গ বলা হয়। ইহজীবনে সাফল্যলাভ করিতে হইলে এই তিনটির আবশ্যক। মৃত্যুর পর পরলোকের কাম্য হইতেছে মোক্ষ অর্থাৎ পুনঃ পুনঃ জন্মগ্রহণের নিবৃত্তি। সাধারণত লোকে ইহজীবনে সাফল্যলাভ করিতে চাহে। একজন সফলকাম ব্যক্তি পরিবারের মেরুদন্ড, সমাজে অভিনন্দিত ও জাতির একজন। চতুবর্গে সাফল্যলাভ করিয়া ভারতীয় আর্যগণ প্রাচীন কালে প্রতিষ্ঠা লাভ করিয়াছিলেন। ভারতের দর্শন সমস্ত পৃথিবীর মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করিয়াছিল এবং মূমূক্ষূগণকে মোক্ষলাভের উপায় নির্দেশ করিয়াছিল। মনু প্রভৃতি স্মৃতিকারগণের পান্ডিত্যপূর্ণ বিধান সংসারী মানুষকে তাহার পালনীয় ধর্মের পন্থা দেখাইয়া দিয়াছিল। বৃহস্পতি, কৌটিল্য প্রভৃতি মনীষীর অর্থশাস্ত্র অর্থোপার্জন ও সামাজিক জীবনযাপনের নির্দেশ দিয়াছিল। সর্বশেষে কামশাস্ত্রের সূক্ষতর বৈশিষ্ট্য অনুধাবন করিয়াছিলেন। প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতা কালচক্রেরনিষ্ঠুর আবর্তনে বিলুপ্ত হওয়ায় বিপুল ভারতীয় সাহিত্যের অধিকাংশ বিস্মৃতির অতলগহবরে চলিয়া গিয়াছে। সুতরাং প্রায় দুই হাজার বৎসরের বিলুপ্তপ্রায় ভারতীয় সাহিত্যের একটা ধারাবাহিক ইতিহাস রচনা করা অসম্ভব।
________________________________________
সরলতাই রহস্য। আমার গুরুদেবের কথ্য অথচ গভীরভাব-প্রকাশক ভাষাই আমার আদর্শ। যে-ভাব প্রকাশের অভিপ্রায় থাকে, সেই ভাবই প্রকাশ করিবে।
এত অল্প সময়ের মধ্যে বাংলা ভাষাকে নিখুঁত করিবার চেষ্টা করিলে উহা বাঁধাধরা ভাষায় পরিণত হইবে। ঠিক ঠিক বলিতে গেলে বাঙলা ভাষায় ক্রিয়া নাই। মাইকেল মধুসূদন দত্ত কবিতায় ইহার প্রতিকার করিবার চেষ্টা করিয়াছিলেন। কবি-কঙ্কন বাঙলার শ্রেষ্ঠ কবি ছিলেন। পতঞ্জলির মহাভাষ্য সংস্কৃত ভাষায় শ্রেষ্ঠ গদ্য; ইহার ভাষা বলিষ্ঠ। হিতোপদেশের ভাষা মন্দ নয়, কিন্তু কাদম্বরীর ভাষা অপকৃষ্টতার দৃষ্টান্ত।
বাঙলা ভাষা বরং পালির ধাঁচে গঠিত হওয়া উচিত, সংস্কৃতের ধাঁচে নয়। কারণ বাঙলার সহিত পালির অধিকতর সাদৃশ্য আছে। বাঙলায় পরিভাষা-শব্দ সৃষ্টির জন্য সংস্কৃত শব্দ ব্যবহার করিতে হইবে এবং নূতন নূতন শব্দ উদ্ভাবন করিবার চেষ্টাও করিতে হইবে। এই উদ্দেশ্যে যদি সংস্কৃত অভিধান হইতে ঐ সকল শব্দ সংগ্রহ করা হয়, তাহা হইলে বাঙলা ভাষা গঠনের প্রভূত সহায়তা হইবে।