হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট আইন ২০১৮
১৯৮৩ সালের ৬৮ নম্বর অধ্যাদেশ বলে হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠিত হয়।
ট্রাস্টের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য:
ট্রাস্টের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হইবে হিন্দু ধর্মালম্বীদের সার্বিক কল্যাণ সাধনে হিন্দু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানদি পরিচালনা, সংস্কার, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে সহায়তা প্রদান এবং হিন্দু ধর্মের ইতিহাস, দর্শন, সংস্কৃতি ও শান্তিপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সমন্বিতভাবে কার্য পরিচালনা।
ট্রাস্টের কার্যাবলী:
(ক) হিন্দু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, উপাসনালয় এবং শ্মশান প্রতিষ্ঠা, সংস্কার, সংরক্ষণ , উন্নয়ন রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনায় আর্থিক ও অন্যান্য সহায়তা প্রদান;
(খ) হিন্দু ধর্মীয় উপাসনালয়ের পবিত্রতা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ;
(গ) হিন্দু ধর্মীয় অনুসারীদের দেশে-বিদেশে তীর্থভ্রমণে সহায়তা প্রদান;
(ঘ) হিন্দু ধর্মীয় উৎসব পালনে সহায়তা প্রদান;
(ঙ) দুঃস্থ হিন্দুদের আর্থিক সহায়তা প্রদান;
(চ) ট্রাস্টের সর্বক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যথাযথ প্রয়োগ ও ব্যবহার নিশ্চিতকরণ;
(ছ) ধর্মীয় শাস্ত্র ও সংস্কৃত ভাষা বিষয়ে পুরোহিত ও সেবাইতগণের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ;
(জ) হিন্দু ধর্মীয় বিষয়ে শিক্ষা ও গবেষণার জন্য অনুদান , পুরস্কার, পদক ও বৃত্তি প্রদান;
(ঝ) প্রাচীন তীর্থস্থান ও পীঠস্থান চিহ্নিতকরণ এবং উহাদের সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সহায়তা প্রদান;
(ঞ) হিন্দু ধর্মীয় প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাকেন্দ্র বা অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও উহাদের উন্নয়নে সহযোগিতা প্রদান;
(ট) দেবোত্তর সম্পত্তি উদ্ধার ও সংরক্ষণ;
(ঠ) হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সামাজিক , সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ,বিশ্বভ্রাতৃত্ববোধ, মানবতাবোধ, সহিষ্ণুতা , সহমর্মিতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কাজে সহযোগিতা প্রদান;
(ড) হিন্দু ধর্মীয় গ্রন্থাবলি প্রণয়ন, অনুবাদ এবং সাময়িকী বা প্রচারপত্র প্রকাশকরণ;
(ঢ) হিন্দু ধর্মীয় ইতিহাস, আদর্শ, সাহিত্য, দর্শন, সংস্কৃতি , আইন, ন্যায়বিচার সংক্রান্ত বিষয়ে গবেষণা পরিচালনা এবং এতদুদ্দেশ্যে সম্মেলন, সিম্পোজিয়াম, কর্মশালা, সেমিনার, প্রদর্শনীসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানাদি আয়োজন;
(ণ) হিন্দু ধর্ম সংক্রান্ত সমৃদ্ধ লাইব্রেরি ও ডিজিটাল অথ্যভাণ্ডার স্থাপন;
The Hindu Religious Welfare Trust Ordinance, 1983 [Repealed]
“Trust” means the Hindu Religious Welfare Trust
3. (1) There shall be established a Trust to be called the Hindu Religious Welfare Trust for carrying out the purposes of this Ordinance.
(2) The Trust shall be a body corporate having perpetual succession and a common seal, with power to acquire, hold and dispose of property, both movable and immovable, and shall by the said name sue and be sued.
(3) The Head Office of the Trust shall be at such place as the Government may, by notification in the official Gazette, specify.
7. (1) The functions of the Trust shall generally be to provide for the religious welfare of the Hindu community.
(2) In particular and without prejudice to the generality of the foregoing provisions, the Trust may,-
(a) provide financial assistance for the maintenance and administration of places of Hindu religious worship;
(b) adopt measures for the maintenance of sanctity of places of Hindu religious worship;
(c) do such other acts and things as may be considered necessary for carrying out the purposes of this Ordinance.
10. (1) The Trust shall have its own fund which shall be utilised by it to meet the charges in connection with its functions under this Ordinance.
(2) The Government shall make a fixed deposit of nine crore Taka with a scheduled bank and the interest accruing therefrom from time to time shall be transferred to the fund of the Trust as grant of the Government.
Provided that, the Government may from time to time increase the amount of the fixed deposit.]
(3) The fund shall consist of-
(a) interest accrued from the fixed deposit made by the Government under sub-section (2);
(b) donations and endowments;
(c) receipts from such other sources as may be approved by the Board.
(4) All moneys of the Trust shall be kept in any scheduled bank.
(5) The bank account of the Trust shall be operated by such Trustee or officer as the Board may determine.
হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট আইন ২০১৮
Text
যেহেতু সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪ নং আইন) দ্বারা ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ হইতে ১৯৮৬ সালের ১১ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে সাময়িক ফরমান দ্বারা জারিকৃত অধ্যাদেশসমূহের অনুমোদন ও সমর্থন সংক্রান্ত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের চতুর্থ তপশিলের ১৯ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত হওয়ায় এবং সিভিল আপিল নং ৪৮/২০১১ তে সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত রায়ে সামরিক আইনকে অসাংবিধানিক ঘোষণাপূর্বক উহার বৈধতা প্রদানকারী সংবিধান (সপ্তম সংশোধন) আইন, ১৯৮৬ (১৯৮৬ সনের ১নং আইন) বাতিল ঘোষিত হওয়ায় উক্ত অধ্যাদেশসমূহের কার্যকারিতা লোপ পায়; এবং
যেহেতু ২০১৩ সনের ৭নং আইন দ্বারা উক্ত অধ্যাদেশসমূহের মধ্যে কতিপয় অধ্যাদেশ কার্যকর রাখা হয়; এবং
যেহেতু উক্ত অধ্যাদেশসমূহের আবশ্যকতা ও প্রাসঙ্গিকতা পর্যালোচনা করিয়া আবশ্যক বিবেচিত অধ্যাদেশসমূহ সকল স্টেক-হোল্ডার ও সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মতামত গ্রহণ করিয়া প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জনক্রমে বাংলায় নূতন আইন প্রণয়ন করিবার জন্য সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়াছে; এবং
যেহেতু সরকারের উপরি-বর্ণিত সিদ্ধান্তের আলোকে Hindu Religious Welfare Trust Ordinance, 1983 (Ordinance No. LXVIII of 1983) রহিতক্রমে উহা পরিমার্জনপূর্বক পুনঃপ্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
সংজ্ঞা
(১) ‘‘চেয়ারম্যান’’ অর্থ ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান;
(২) ‘‘ট্রাস্ট’’ অর্থ ধারা ৩ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট;
(৩) ‘‘ট্রাস্টি’’ অর্থ ট্রাস্টি বোর্ডের কোনো সদস্য;
(৪) ‘‘ট্রাস্টি বোর্ড’’ অর্থ ধারা ৫-এর অধীন গঠিত ট্রাস্টি বোর্ড;
(৫) ‘‘তহবিল’’ অর্থ ধারা ১২ এ উল্লিখিত ট্রাস্টের তহবিল;
(৬) ‘‘প্রবিধান’’ অর্থ ধারা ১৮ এর অধীন প্রণীত প্রবিধান;
(৭) ‘‘বিধি’’ অর্থ ধারা ১৭ এর অধীন প্রণীত বিধি;
(৮) ‘‘ভাইস-চেয়ারম্যান’’ অর্থ ট্রাস্টি বোর্ডের ভাইস-চেয়ারম্যান;
(৯) ‘‘সচিব’’ অর্থ ধারা ১০ এর অধীন নিযুক্ত ট্রাস্টের সচিব; এবং
(১০) ‘‘সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান’’ অর্থ ট্রাস্টি বোর্ডের সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান।
ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা
৩। (১) Hindu Religious Welfare Trust Ordinance, 1983 (Ordinance No. LXVIII of 1983) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত Hindu Religious Welfare Trust এমনভাবে বহাল থাকিবে যেন উহা এই আইনের অধীনে হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে।
(২) ট্রাস্ট একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং উহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সিলমোহর থাকিবে এবং উহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার ও হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং উহা নিজ নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং উক্ত নামে উহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।
প্রধান কার্যালয়
৪। (১) ট্রাস্টের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় থাকিবে।
(২) ট্রাস্টি বোর্ড, প্রয়োজনবোধে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, বাংলাদেশের যে কোনো স্থানে উহার শাখা কার্যালয় স্থাপন করিতে পারিবে।
ট্রাস্টি বোর্ড গঠন
৫। (১) নিম্নবর্ণিত সদস্যগণের সমন্বয়ে ট্রাস্টি বোর্ড গঠিত হইবে, যথা:-
(ক) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী, যিনি উহার চেয়ারম্যানও হইবেন;
(খ) জাতীয় সংসদের স্পীকার কর্তৃক মনোনীত ০২ (দুই) জন সংসদ-সদস্য, যাহারা সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যানও হইবেন;
(গ) সচিব, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়; এবং
(ঘ) হিন্দু ধর্মাবলম্বী বিশিষ্ট ব্যক্তিগণের মধ্য হইতে, প্রত্যেক বিভাগের অন্যূন ০২ (দুই) জন করিয়া, সরকার কর্তৃক মনোনীত ২১ (একুশ) জন ট্রাস্টি।
(২) সচিব, ট্রাস্টি বোর্ডের সাচিবিক দায়িত্ব পালন করিবেন।
(৩) সরকার উপ-ধারা (১) এর দফা (ঘ) এর অধীন মনোনীত ট্রাস্টিগণের মধ্য হইতে ১ (এক) জনকে ভাইস-চেয়ারম্যান হিসাবে মনোনীত করিবে।
(৪) উপ-ধারা (১) এর দফা (ঘ) এর অধীন মনোনীত ট্রাস্টিগণ তাহাদের মনোনয়নের তারিখ হইতে ৩ (তিন) বৎসর মেয়াদে ট্রাস্টি হিসাবে বহাল থাকিবেন :
তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত মেয়াদ শেষ হইবার পূর্বে সরকার কোনো মনোনীত ট্রাস্টিকে কোনরূপ কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে তাহার দায়িত্ব হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে।
(৫) উপ-ধারা (১) এর দফা (ঘ) এর অধীন মনোনীত কোনো ট্রাস্টি যে কোনো সময় চেয়ারম্যানের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে ট্রাস্টির দায়িত্ব পরিত্যাগ করিতে পারিবেন।
(৬) ট্রাস্টি পদে কেবল শূন্যতা বা ট্রাস্টি বোর্ড গঠনে ত্রুটি থাকিবার কারণে ট্রাস্টি বোর্ডের কোনো কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না এবং তৎসম্পর্কে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।
ট্রাস্টের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
৬। ট্রাস্টের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হইবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় কল্যাণসহ সার্বিক কল্যাণ সাধন; সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিপূর্ণ সহাবস্থান এবং শান্তিপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সমন্বিতভাবে কার্য পরিচালনা।
ট্রাস্টি বোর্ডের সভা
৭। (১) এই ধারার অন্যান্য বিধানাবলি সাপেক্ষে ট্রাস্টি বোর্ড উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।
(২) ট্রাস্টি বোর্ডের সভা, চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত সময়, তারিখ ও স্থানে সদস্য-সচিব কর্তৃক আহূত হইবে।
(৩) চেয়ারম্যান ট্রাস্টি বোর্ডের সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন, তবে তাহার অনুপস্থিতিতে সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যানদ্বয় জ্যেষ্ঠতানুসারে এবং তাহাদের অনুপস্থিতিতে ভাইস-চেয়ারম্যান এবং উল্লিখিত সকলের অনুপস্থিতিতে চেয়ারম্যানের নিকট হইতে এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ট্রাস্টি সভায় সভাপতিত্ব করিবেন।
(৪) ট্রাস্টি বোর্ডের মোট সদস্য সংখ্যার অন্যূন এক-তৃতীয়াংশ সদস্যের উপস্থিতিতে সভার কোরাম হইবে।
(৫) ট্রাস্টি বোর্ডের সভায় প্রত্যেক সদস্যের একটি করিয়া ভোট থাকিবে, তবে ভোটের সমতার ক্ষেত্রে, সভাপতিত্বকারী ব্যক্তির দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে।
ট্রাস্টের কার্যাবলি
৮। (ক) হিন্দুধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, উপাসনালয় এবং শ্মশান প্রতিষ্ঠা, সংস্কার, সংরক্ষণ, উন্নয়ন, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনায় আর্থিক ও অন্যান্য সহায়তা প্রদান;
(খ) হিন্দুধর্মীয় উপাসনালয়ের পবিত্রতা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ;
(গ) হিন্দু ধর্মের অনুসারীদের দেশে-বিদেশে তীর্থভ্রমণে সহায়তা প্রদান;
(ঘ) হিন্দুধর্মীয় উৎসব পালনে সহায়তা প্রদান;
(ঙ) দুঃস্থ হিন্দুদের আর্থিক সহায়তা প্রদান;
(চ) ট্রাস্টের সর্বক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যথাযথ প্রয়োগ ও ব্যবহার নিশ্চিতকরণ;
(ছ) ধর্মীয় শাস্ত্র ও সংস্কৃত ভাষা বিষয়ে পুরোহিত ও সেবাইতগণের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ;
(জ) হিন্দুধর্মীয় বিষয়ে শিক্ষা ও গবেষণার জন্য অনুদান, পুরস্কার, পদক ও বৃত্তি প্রদান;
(ঝ) প্রাচীন তীর্থস্থান ও পীঠস্থান চিহ্নিতকরণ এবং উহাদের উন্নয়ন ও সংরক্ষেণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সহায়তা প্রদান;
(ঞ) হিন্দুধর্মীয় প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাকেন্দ্র বা অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও উহাদের উন্নয়নে সহযোগিতা প্রদান;
(ট) দেবোত্তর সম্পত্তি উদ্ধার ও সংরক্ষণ;
(ঠ) হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ, বিশ্বভ্রাতৃত্ববোধ, মানবতাবোধ, সহিষ্ণুতা, সহমর্মিতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কাজে সহযোগিতা প্রদান;
(ড) হিন্দুধর্মীয় গ্রন্থাবলি প্রণয়ন, অনুবাদ এবং সাময়িকী বা প্রচারপত্র প্রকাশকরণ;
(ঢ) হিন্দুধর্মীয় ইতিহাস, আদর্শ, সাহিত্য, দর্শন, সংস্কৃতি, আইন, ন্যায়বিচার সংক্রান্ত বিষয়ে গবেষণা পরিচালনা এবং এতদুদ্দেশ্যে সম্মেলন, সিম্পোজিয়াম, কর্মশালা, সেমিনার, প্রদর্শনীসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানাদি আয়োজন;
(ণ) হিন্দুধর্ম সংক্রান্ত সমৃদ্ধ লাইব্রেরি ও ডিজিটাল তথ্যভাণ্ডার স্থাপন; এবং
(ত) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে প্রয়োজনীয় অন্যান্য কার্যাবলি সম্পাদন।
পরিচালনা ও প্রশাসন
৯। ট্রাস্টের পরিচালনা ও প্রশাসন ট্রাস্টি বোর্ডের উপর ন্যস্ত থাকিবে এবং ট্রাস্ট যে সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্য সম্পাদন করিতে পারিবে, ট্রাস্টি বোর্ডও সেই সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্য সম্পাদন করিতে পারিবে।
সচিব
১০। (১) ট্রাস্টের ০১ (এক) জন সচিব থাকিবেন, যিনি উহার প্রধান নির্বাহী হইবেন।
(২) সচিব নির্ধারিত শর্তে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের মধ্য হইতে ট্রাস্টি বোর্ড কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হইবেন।
(৩) সচিব প্রধান নির্বাহী হিসাবে ট্রাস্টি বোর্ড কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব ও কার্য-সম্পাদন করিবেন এবং ট্রাস্টি বোর্ডের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য দায়ী থাকিবেন।
(৪) সচিবের পদ শূন্য হইলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে সচিব তাহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে, শূন্য পদে নবনিযুক্ত সচিব কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত কিংবা সচিব পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত, ট্রাস্টি বোর্ড কর্তৃক মনোনীত হিন্দুধর্মাবলম্বী উপযুক্ত কোনো ব্যক্তি নির্ধারিত শর্তে সচিবের দায়িত্ব পালন করিবেন।
কর্মচারী নিয়োগ
১১। (১) ট্রাস্ট উহার কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য, সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে।
(২) ট্রাস্টের কর্মচারীদের নিয়োগ পদ্ধতি এবং চাকরির শর্তাবলি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
ট্রাস্টের তহবিল
১২। ট্রাস্টের তহবিল (১) হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট তহবিল নামে ট্রাস্টের একটি তহবিল থাকিবে এবং উহাতে নিম্নবর্ণিত অর্থ জমা হইবে, যথা :-
(ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
(খ) কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
(গ) সরকার অনুমোদিত দেশি বা বিদেশি উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ;
(ঘ) সরকারের পূর্বানুমতিক্রমে কোনো ব্যাংক বা অন্য কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান হইতে প্রাপ্ত ঋণ;
(ঙ) তহবিলের বিনিয়োগ হইতে আহরিত অর্থ;
(চ) ট্রাস্টের নিজস্ব উৎস হইতে প্রাপ্ত আয়; এবং
(ছ) ট্রাস্টি বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত অন্য কোনো উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ।
(২) তহবিলের অর্থ ট্রাস্টের নামে ট্রাস্টি বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত কোনো তপশিলি ব্যাংকে জমা রাখিতে হইবে এবং উক্তরূপ অর্থ হইতে ট্রাস্টের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করা যাইবে।
ব্যাখ্যা।- এই ধারায় উল্লিখিত ‘‘তপশিলি ব্যাংক’’ অর্থে Bangladesh Bank Order, 1972 (P.O. 127 of 1972) এর Article 2(j) তে সংজ্ঞায়িত Scheduled Bank কে বুঝাইবে।
(৩) তহবিলের ব্যাংক হিসাব ট্রাস্টি বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত পদ্ধতিতে এবং ট্রাস্টি বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত ১(এক) জন ট্রাস্টি এবং সচিবের যৌথ স্বাক্ষরে পরিচালিত হইবে।
বাজেট
১৩। ট্রাস্ট প্রত্যেক বৎসর সরকার কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত সময়ের মধ্যে পরবর্তী অর্থবৎসরের বার্ষিক বাজেট বিবরণীর অনুমোদনের জন্য সরকারের নিকট পেশ করিবে এবং উহাতে উক্ত অর্থ বৎসরে সরকারের নিকট হইতে ট্রাস্টের কি পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হইবে উহার উল্লেখ থাকিবে।
হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষা
১৪। (১) ট্রাস্ট উহার আয়-ব্যয়ের হিসাব যথাযথভাবে সংরক্ষণ করিবে এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে।
(২) বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক বলিয়া উল্লিখিত, প্রত্যেক বৎসর ট্রাস্টের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদনের একটি করিয়া অনুলিপি সরকার ও ট্রাস্টি বোর্ডের নিকট পেশ করিবেন।
(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক কিংবা তাহার নিকট হইতে এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি ট্রাস্টের সকল রেকর্ড, দলিল-দস্তাবেজ, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, জামানত, ভাণ্ডার এবং অন্যবিধ সম্পত্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য, সচিব ও ট্রাস্টের অন্যান্য কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন।
(৪) উপ-ধারা (২) এর অধীন হিসাব-নিরীক্ষা ছাড়াও Bangladesh Chartered Accountants Order, 1973 (P.O. No. 2 of 1973) এর Article 2 (1) (b) তে সংজ্ঞায়িত চার্টার্ড একাউনটেন্ট দ্বারা ট্রাস্টের হিসাব নিরীক্ষা করা যাইবে এবং এতদুদ্দেশ্যে ট্রাস্ট এক বা একাধিক চার্টার্ড একাউনটেন্ট নিয়োগ করিতে পারিবে।
ক্ষমতা অর্পণ
১৫। ট্রাস্টি বোর্ড, উহার যে কোনো ক্ষমতা সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা নির্ধারিত শর্ত সাপেক্ষে চেয়ারম্যান, সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান, কোনো ট্রাস্টি, সচিব বা অন্য যে কোনো কর্মচারীকে অর্পণ করিতে পারিবে।
প্রতিবেদন
১৬। (১) প্রত্যেক অর্থ বৎসর শেষ হইবার পর উক্ত অর্থ বৎসরের সম্পাদিত কার্যাবলির বিবরণ সংবলিত একটি বার্ষিক প্রতিবেদন পরবর্তী বৎসরের ৩০ জুনের মধ্যে সরকারের নিকট পেশ করিবে।
(২) সরকার প্রয়োজনে, ট্রাস্টের নিকট হইতে উহার যে কোনো বিষয়ের উপর প্রতিবেদন এবং বিবরণী অথবা অন্য কোনো তথ্য চাহিতে পারিবে এবং ট্রাস্ট উহা সরবরাহ করিবে।
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
১৭। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা
১৮। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ট্রাস্টি বোর্ড সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধির সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।
রহিতকরণ ও হেফাজত
১৯। (১) এই আইন কার্যকর হইবার সঙ্গে সঙ্গে Hindu Religious Welfare Trust Ordinance, 1983 (Ordinance No. LXVIII of 1983) অতঃপর উক্ত Ordinance বলিয়া উল্লিখিত, রহিত হইবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন রহিত হওয়া সত্ত্বেও উক্ত Ordinance- এর অধীন,-
(ক) কৃত সকল কার্যক্রম ও গৃহীত ব্যবস্থা এই আইনের অধীন কৃত ও গৃহীত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে;
(খ) গঠিত ট্রাস্ট এর তহবিল, সম্পদ, স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, দায়-দেনা এই আইনের অধীন গঠিত ট্রাস্টের তহবিল, সম্পদ, স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ এবং দায়-দেনা হিসাবে গণ্য হইবে;
(গ) গৃহীত কোনো কার্য ও ব্যবস্থা ট্রাস্ট কর্তৃক বা উহার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত কোনো মামলা অনিষ্পন্ন বা চলমান থাকিলে উহা এমনভাবে নিষ্পন্ন করিতে হইবে বা চলমান থাকিবে যেন উক্ত Ordinance রহিত হয় নাই;
(ঘ) প্রণীত সকল বিধি, প্রবিধান যাহা উক্ত Ordinance রহিত হওয়ার অব্যবহিত পূর্ব পর্যন্ত কার্যকর ছিল উহা এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি, প্রবিধান দ্বারা রহিত বা পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত প্রয়োজনীয় অভিযোজনসহ এবং যতদূর পর্যন্ত এই আইনের বিধানাবলির পরিপন্থি না হয় ততদূর পর্যন্ত কার্যকর থাকিবে;
(ঙ) নিযুক্ত ট্রাস্টিগণ এই আইন প্রবর্তনের অব্যবহিত পূর্বে যেই সকল শর্তাধীনে নিয়োজিত ছিলেন, এই আইনের বিধান অনুযায়ী পরিবর্তিত না হওয়া পর্যন্ত, সেই একই শর্তাধীনে নিয়োজিত থাকিবেন এবং পূর্বের নিয়মে প্রদেয় সুবিধাদি প্রাপ্ত হইবেন; এবং
(চ) নিযুক্ত কর্মচারীগণ এই আইন প্রবর্তনের অব্যবহিত পূর্বে যেই সকল শর্তাধীনে চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন, এই আইনের বিধান অনুযায়ী পরিবর্তিত না হওয়া পর্যন্ত, সেই একই শর্তাধীনে ট্রাস্টের চাকরিতে নিয়োজিত থাকিবেন এবং পূর্বের নিয়মে, ক্ষেত্রমত প্রদেয় বেতন, ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাদি প্রাপ্ত হইবেন।
হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট আইন ২০১৮
Application Form to register your property as Debattar
front page › Forums › Bangladesh Hindu Dharmiya Kalyan Trust Aain (2018)-হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট আইন ২০১৮
Tagged: 2018CE, BANGLADESH, Debattar, Hindu Religious Trust